সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন

জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলা ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলা ছাত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

স্বদেশ ডেস্ক:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। তবে বিভাগের পক্ষ থেকে যৌন হয়রানির প্রতিকার না পেয়ে ওই ছাত্রী ‘আত্মহত্যা’র চেষ্টা করেছেন বলেও জানা গেছে।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম ড. সানোয়ার সিরাজ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় সভাপতি বরাবর যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।

এ বিষয়ে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা জানান, গত বুধবার অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, গত এক বছর ধরে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে লড়ে আসছিলেন তিনি। কোনো বিচার না পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ওই ছাত্রী। ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ২৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টা করেন তিনি। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।পরে দুপুরে তাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।

লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী জানান, ২০১৮ সালে তিনি তার তৃতীয় পর্বের একটি কোর্সের মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য তিনি কোর্স শিক্ষক অভিযুক্ত সানওয়ার সিরাজের শরণাপন্ন হন। সে সময় ওই শিক্ষক ছাত্রীর ফোন নম্বর নেন এবং যেকোনো সমস্যায় যোগাযোগ করতে বলেন। পরদিন শিক্ষক নিজেই ওই ছাত্রীকে ফোন করে পরীক্ষা কেমন হলো তা জানতে চান। সেদিন রাতে শিক্ষক সানওয়ার সিরাজ ছাত্রীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করে তার সঙ্গে ঘোরাফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করে তার এ ধরনের আচরণে আমি বিস্মিত হই। পরবর্তী সময়ে আমি বিভাগে গিয়ে তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছিল কিনা, তা জানতে চাই। তিনি নিশ্চিত করেন, আইডি হ্যাক হয়নি। তিনি নিজেই ওইসব মেসেজ পাঠিয়েছেন।’

ওই ছাত্রী বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে ওই শিক্ষক আমাকে জামা উপহার, রেস্টুরেন্টে খাওয়া, রাতে একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়া ও স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তার বাসায় রাত যাপনের প্রস্তাব দেন। ’

ব্যর্থ হয়ে ওই শিক্ষক তার কোর্সে কম নম্বর দেন। তিনি ধারাবাহিক অত্যাচারে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন বলেও জানান ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।

বিভাগে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক সেমিনারে নিজের যৌন হয়রানির বিষয়টি উত্থাপন করায় বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক সামসুন্নাহার খানম তার ওপর ক্ষিপ্ত হন বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।

ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমি যৌন হয়রানির তথ্যপ্রমাণ বিভাগের তৎকালীন সভাপতির কাছে হস্তান্তর করি। তিনি আমাকে সহানুভূতি জানিয়ে এসব ভুলে গিয়ে ক্যারিয়ারের দিকে নজর দিতে বলেন। আর অভিযোগের গোপনীয়তা রক্ষা না করে তিনি বিষয়টি শিক্ষকদের মাঝে ছড়ান।’

এ বিষয়ে বিভাগের সদ্য সাবেক সভাপতি অধ্যাপক সামসুন্নাহার খানম বলেন, ‘আমাকে কোনো ধরনের লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। আমার নামে যা বলেছে, তা বানিয়ে বলছে। আমি আমার বক্তব্যে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলিনি। বরং তার কথা শোনার জন্য ওই সেমিনারের পরে তাকে খুঁজেছি, তার বন্ধুদের কাছে খোঁজ নিয়েছি।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877